Уважаемые пользователи Голос!
Сайт доступен в режиме «чтение» до сентября 2020 года. Операции с токенами Golos, Cyber можно проводить, используя альтернативные клиенты или через эксплорер Cyberway. Подробности здесь: https://golos.io/@goloscore/operacii-s-tokenami-golos-cyber-1594822432061
С уважением, команда “Голос”
GOLOS
RU
EN
UA
joy69
6 лет назад

ভুল

বুকের ওড়না সরাতে সরাতে আনিকা বললো— কাজ টা কী ঠিক হচ্ছে?
উদয়ের কড়া জবাব— তোমার সাথে দীর্ঘ সাত বছরের প্রেম আমার আনিকা। তোমাকে একটু ছুঁয়ে দেয়ার অধিকার কী আমার নেই? এই সাত সাত টা বছরে আমি তোমার হাত পর্যন্ত ধরতে চাইনি। তুমি বলেছিলে বিয়ের পরে সব হবে। মাঝপথে আমি দেশে না থাকাকালীন অন্যের স্ত্রী হয়ে গেলে। এখন আবার ফিরে আসতে চাইছো! আমি কী তাহলে তোমার শরীর টা চেয়ে ভুল করেছি?
আনিকার মাথা নিচু হয়ে গেলো।
উদয় মিথ্যে বলেনি।
এক টাকার একটা চকলেট দুজনে ভাগ করে খাওয়ার প্রেম ছিলো তাঁদের। নিজের ইচ্ছাতেই এক সাংবাদিকের বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়ে গিয়েছিলো। পারিবারিকভাবে ও না। আনিকার পরিবার উদয়কে পছন্দই করতো। আধনগ্ন হয়ে আনিকা বললো— তুমি আমার শরীরটাকেই ভালবাসো?
— আগে বাসতাম না আনিকা। এখন বাসি। অনেক বেশি ভালবাসি। মেয়েদের মনে কিচ্ছু নেই আনিকা। সব কচু পাতার পানির তুল্য। শরীরে তো সব আছে।
কথাগুলো আনিকার রক্তে লবণ ছিটাচ্ছিলো। ভারমুখে গলা ছাড়লো— প্রেম করোনি ওখানে?
— প্রেম করার প্রয়োজন পড়েনি আনিকা। আমার বস ছিলো একজন ইরানী। জানোই তো ইরানী মেয়েরা কতো সুদর্শন হয়। সারাক্ষণ উনার পাশে থাকাটাই ছিলো আমার চাকুরী।
— স্পষ্ট জবাব পেলাম না।
উদয় জানালা টেনে বললো— একটা বাঙালি মেয়ের সাথে পরিচয় হয়েছিলো। নাইট ক্লাবে কাজ করলেও মেয়েটাকে আমার পবিত্রই মনে হয়েছিলো। ভালো বন্ধুত্ব হওয়ার সুবাধে তোমার কথা বলেছিলাম। এরপরে আর যোগাযোগ হয়নি। অন্য কোথাও চলে গিয়েছে হয়তো।
— আর বাংলাদেশে?
উদয় আবছা গতির একটা হাসি দিয়ে বললো— কাউকে মিথ্যে স্বপ্ন দেখাইনি। তোমার বিয়ের পরে কাউকে খুব কাছে পাওয়ার ইচ্ছে হলে পকেটে কয়েকশো টাকা নিয়ে পতিতালয়ে চলে গিয়েছি।
— বেশ সোজাসাপটা কথা বলো তুমি!
— সোজাসাপটা ভালোও বেসেছিলাম তোমায়।
— এখন বাসো না?
— বাসি, তবে তোমার সুন্দর শরীরটাকে। তোমার মন তুমি ডাস্টবিনে ফেলে এসেছো।
আনিকা জানালা টা বন্ধ করে দিলো। বন্ধ ঘর আনিকার খুব পছন্দ। কোথাও আলো নেই। কেউ বাঘের মতো শরীরে ঝাঁপিয়ে পড়লেও অন্তত তাঁর মুখ টা দেখা যাবে না।
— তুমি কী জানো আমি কেনো তোমার কাছে ফিরতে চাচ্ছি?
— কারণ এখন আমি আর ছোটলোক নই। ঢাকা শহরে কয়েকটা ফ্ল্যাট আছে। সপ্তাহে সাত দিন সাত টা গাড়ি নিয়ে বের হই। ব্যাংক একাউন্টে প্রতি সেকেন্ডে টাকা ঢুকছে।
— উদয় তোমার মনে আছে একদিন আমি তোমার বাড়িতে গিয়েছিলাম? আমাকে বসতে দেয়ার মতো জায়গা ও ছিলো না তোমাদের।
— তারপরেও তুমি মায়ের সাথে অনেকক্ষণ গল্প করেছিলে।
— সেদিন তোমার মা বলেছিলো আমার মতো যদি উনার একটা মেয়ে থাকতো!
— শুনেছিলাম আড়ালে দাঁড়িয়ে। ভালোই লেগেছিলো আমার। তোমাকে মায়ের মেয়েই বানাতাম। তবে ওসব বলে লাভ নেই। অতীত আমি ভুলিনি।
আনিকা কান্নাস্বরে বললো— আমার দুটো মেয়ে আছে উদয়।
— তোমার একটা শরীর এবং শরীরে শক্তিও আছে আনিকা।
— ওদের ভালো কোনো স্কুলে ভর্তি করাতে হবে। মা বাবার সামনে তো যেতে পারবো না। এখন আমার তুমি ছাড়া কেউ নেই। অনেক কষ্টে তোমার দেখা পেয়েছি। তুমি আমার শরীর চাও আর কেটে টুকরো টুকরো করো। আমার দুটো মেয়েকে ভালো কোনো স্কুলে ভর্তি করিয়ে দাও প্লীজ। যদি বলো শক্তির কথা তবে হ্যাঁ আমি পঙ্গু নই, প্রতিবন্ধী নই, কিন্তু আমার সব রাস্তা যে বন্ধ।
— তোমার সাংবাদিক স্বামী কোথায়?
— সে সাংবাদিক ছিলো না। কিন্তু আমার কাছে নিজেকে যেভাবে উপস্থাপন করেছে। যাকগে সে কথা। সে এখন জার্মানিতে আছে বৌ বাচ্চা নিয়ে৷ আমাদের বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে।
উদয় দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো— তোমরা মেয়েরা খুব বোকা। তোমরা সন্তান জন্ম দিতে পারো যেখানে সেখানে যেভাবে খুশি। কিন্তু মা সব মেয়ে হতে পারে না আনিকা। বিশ্বস্ত হাত ছেড়ে দিয়েছিলে। যার হাত ধরেছিলে সা দুটো বাচ্চা দিয়ে হাওয়া হয়ে গেলো। সে জানোয়ার, কিন্তু তুমিও মানুষ না। আমার একটু একটু করে গড়া স্বপ্নগুলোয় আগুন ধরিয়েছো। এখন মা হয়ে দুটো মেয়েকে ভালো স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য পুরনো প্রেমিকের কাছে এসেছো। আমি চাইলেই তোমাকে সাহায্য করতে পারি। লক্ষ না কোটি টাকার চেক নিমিষেই দিতে পারি কিন্তু আমি তোমাকে এক পয়সাও সাহায্য করবো না।
আনিকা বুকের কাপড় তুলে নিয়ে বললো— তবে আজকে আসি।
— আজকের দিন টা পোড়াবে তোমায় খুব আনিকা। কারণ আমি তোমাকে দয়া দেখিয়েছি। তা কীভাবে বুঝে নাও।
আনিকা চোখে পানি নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। উদয়ের বুকে ছিপছিপে ব্যথা। মেয়েটাকে সে ভালবাসে তবে দুঃখ দিতে চায়নি। কিন্তু তবুও আনিকাকে কথাগুলো বলা দরকার ছিলো উদয়ের। তা ভেবে বুকে পাথর চেপে আনিকাকে এতো নিচু নিচু কথা শুনিয়েছে।
তারপর আর তাঁদের দেখা হয়নি। দুজন দুদিকে। একজন মেডিকেলের ছাত্রী হয়েও রাত্তিরে করছে গার্মেন্টস। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টিউশনি। দুটো মেয়েকে মানুষ করতে হবে। ভালো স্কুলে পড়াতে হবে। দিনশেষে ঘুমুতে পারে না আনিকা।
চোখবুঁজলেই উদয়ের চেহারা টা ভেসে উঠে। উদয়ের বুকের নিচে থাকলে আজকে তাঁর এতো কষ্ট করতে হতো না। ছেলে টা তাঁকে সত্যিই অনেক ভালবাসতো। প্রকৃত ভালবাসা হারানো যন্ত্রণার রেলগাড়ি টা থামছে না আনিকার!

ভুল

0
5.336 GOLOS
На Golos с June 2018
Комментарии (1)
Сортировать по:
Сначала старые