ঘুরে আসুন আলীকদমের তিনাম ঝর্ণা !
ঘুরে আসুন আলীকদমের তিনাম ঝর্ণা !
মমতাজ উদ্দিন আহমদ:
প্রকৃতির আরেক বিস্ময় ‘তিনাম ঝর্ণা’। সুউচ্চ পাহাড় থেকে খানিক দুরত্বে পাশাপাশি দুইটি ঝর্ণা আছে তিনামে! সম্প্রতি গহীন পাহাড়ের বুকে এ তিনাম ঝর্ণার খোঁজ পাওয়া গেছে।
বান্দরবান পার্বত্য জেলার আলীকদম উপজেলায় এ পর্যন্ত লোকচক্ষুর নজরে আসা ঝর্ণাগুলোর মধ্যে সর্বশেষ সংযোজন হচ্ছে ‘তিনাম ঝর্ণা’। এ ঝর্ণাটি দেখতে আলীকদম সদর থেকে মাতামুহুরী নদীপথে অন্তত ৬০/৭০ কিলোমিটার দুরে যেতে হয়।
ঘনঘোর বর্ষায় এ ঝর্ণার প্রবাহ বেশী থাকে। শীতকালেও পানির প্রবাহ ধরে রাখে ঝর্ণাটি। পোয়ামুহুরী থেকে নৌপথে ৩০ মিনেটের দুরত্বে এ ঝর্ণার অবস্থান।
এ ঝর্ণার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পাশাপাশি দুইটি স্রোত। অন্তত দেড়শ’ ফুট উঁচু পাহাড়ের খাদ বেয়ে দুইটি ঝর্ণার পানি গড়িয়ে পড়ছে নীচে। ঝর্ণা দুইটির পানি যেখানে পড়ছে সেখানে জলাশয় রয়েছে। জলাশয়ের পাশে রয়েছে পাশাপাশি দুইটি সুড়ঙ্গ!
সবুজ পাহাড়ের অন্তর্বিহীন নিস্তব্ধতায় তিনাম ঝর্ণা যেন আছল বিছিয়ে রেখেছে পর্যটকদের অভ্যার্থনা জানাতে! পার্বত্যাঞ্চলের অন্যান্য নান্দনিক ঝর্ণার দিক দিয়ে নিঃসন্দেহে তিনাম ঝর্ণার রূপ-বৈচিত্র্য মুগ্ধকর। এ ঝর্ণা দেখতে গেলে নৌপথে মাতামুহুরী নদীর নৈসর্গিক সৌন্দর্য অবলোকন করা যায়।
#কীভাবে যাবেন :
ঢাকা থেকে আলীকদমে সরাসরি শ্যামলী ও হানিফ পরিবহনের বাস সার্ভিস চালু আছে। অথবা কক্সবাজারের চকরিয়া বাস স্টেশন থেকেও বাস কিংবা জীপ যোগে আলীকদম আসা যায়।
বাসস্টেশন থেকে রিক্সা কিংবা অটোতে করে মাতামুহুরী ব্রিজে আসতে হবে। ব্রীজের নীচে বাঁধা থাকে সারি সারি যন্ত্রচালিত নৌকা এবং স্পীড বোট। সেখান থেকে মাতামুহুরী নদীপথে পোয়ামুহুরী বাজার ঘাটে নামতে হবে।
#খরচাপাতি: বর্ষায় ইঞ্জিন বোট ভাড়া জনপ্রতি সাড়ে ৩শ’ টাকা ও শুষ্ক মৌসুমে স্পীড বোট ভাড়া ৪/৫ শ’ টাকা। রিজার্ভ ইঞ্জিন বোট কিংবা স্পীড বোটের রিজার্ভ ভাড়া ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার। ।
#থাকার জায়গা : আলীকদম সদরে শৈলকুঠি রিসোর্টে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। ভোরে ঝর্ণা দেখতে গিয়ে বিকেল উপজেলা সদরে ফিরে এসে রাতের বাসে করে ঢাকা ফেরা যায়।
#মনে রাখবেন: চিপসের প্যাকেট, পলেথিন, সিগারেটের ফিল্টার, পানির বোতলসহ অন্যান্য আবর্জনা নদীতে কিংবা ঝর্ণা এলাকায় ফেলবেন না। পাহাড়ের ঝর্ণা ও জলপ্রপাতসমুহ দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ। অপচনশীল এসব আবর্জনা ফেললে পরিবেশ নষ্ট হয়।
#সতর্কতা: পথে জোঁক থাকতে পারে, তাই সতর্ক থাকবেন। লবণ সঙ্গে রাখলে ভালো হয়। জোঁক কামড়ালে লবণ ছিটিয়ে দিলে কাজ হয়। সিগারেটের তামাকও ব্যবহার করা যায়। ঝর্ণায় যাওয়ার রাস্তা অতি দুর্গম। যাঁরা পাহাড়ি পরিবেশে হাঁটতে পারেন না তারা সেখানে না গেলেই ভালো। শিশু, বয়স্ক বা অপ্রাপ্তবয়স্কদের সেখানে না নেওয়ায় সঙ্গত। হাঁটতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটলে দুর্গম পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে ফিরে আসা দুরহ। কাজেই পাহাড়ে হাঁটার অভিজ্ঞতা না থাকলে সেখানে না যাওয়ার সিদ্ধান্তই ভালো।